রাজশাহীতে করোনার পরীক্ষার সনদ জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মচারী করোনা পজিটিভ সনদ তার প্রতিষ্ঠানে জমা দিয়েছিলেন।
প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সনদটি যাচাই করার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। এতে ধরা পরে সনদটি জাল। তবে সনদধারী ওই কর্মচারী দাবি করেছেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
ওই কর্মচারীর নাম মমতাজ ইসলাম (২৬)। তাঁর বাড়ি রাজশাহী মহানগরীল হড়গ্রাম এলাকায়। তিনি ঢাকায় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তর প্রতিষ্ঠান থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে করোনা পজিটিভ সনদটি যাচাই করার জন্য পাঠানো হয়।
গত সোমবার কলেজ কর্তৃপক্ষ এটি হাতে পায়। সেদিনই যাচাই করে দেখা গেছে সনদটি এই ল্যাব থেকে দেওয়া হয়নি। মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবের প্যাড নকল করে কলেজের সনদের আদলে অবিকল নকল সনদ তৈরি করা হয়েছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী যুগান্তরকে জানান, মঙ্গলবার তারা নিশ্চিত হয়েছেন যে সনদটি নকল। এটা ধরা পড়ার পরই তারা নগরের রাজপাড়া থানায় মামলা করার জন্য অভিযোগ দিয়েছেন। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যে প্রতিষ্ঠান এই সনদ যাচাইয়ের জন্য পাঠিয়েছে তারাই মামলা করবেন।
রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন খান বলেন, নিয়ম অনুযায়ী যে প্রতিষ্ঠান যাচাইয়ের জন্য সনদটি পাঠিয়েছে, তারাই মামলা করবে। তবে এ নিয়ে থানায় এখনো কোন অভিযোগ দেওয়া হয়নি। মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি যাচাই বাছাই করছে বলে শুনেছি। পরে বিস্তারিত জানানো যাবে।
করোনার নকল সনদ গ্রহণকারী মমতাজ ইসলাম বলেন, ১৫ জুলাই করোনা পরীক্ষার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে গিয়েছিলেন। সেখানে অ্যাপ্রোন ও মাস্ক পরা দুজন লোককে দেখে তিনি তাঁদের হাসপাতালের লোক মনে করেছিলেন।
তিনি করোনা পরীক্ষার ব্যাপারে তাঁদের কাছে পরামর্শ চেয়েছিলেন। তারা তাকে জানান, অনলাইনে রেজিষ্ট্রেশান করলে বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার পর প্রতিবেদন দেওয়া হবে। আর হাসপাতালে করলে এখানে নমুনা নেওয়া হবে।
তিনি অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে রাজি হলে তারা তার পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা ও ফোন নম্বর নিয়ে তাৎক্ষণিক অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে দেন বলে তাকে নিশ্চিত করেন।
পরের দিন তার বাসায় পিপিই পরে একজন লোক যান।
নাকের ভেতরে নল দিয়ে তার নমুনা নিয়ে আসেন। তখন ওই ব্যক্তি বলেন, এই রেজিস্ট্রেশনের জন্য হাসপাতাল থেকে ২০০ টাকা করে নেওয়া হয়। তবে পরে তাদেরকে ১ হাজার ৮০০ টাকা দিতে হয়।
মমতাজ ইসলাম জানান, গত ২১ জুলাই অন্য একজন লোক বাসায় এসে তার মায়ের কাছে করোনা পজিটিভ সনদ দিয়ে যান এবং ১ হাজার ৮০০ টাকা নিয়ে যান। তিনি তখন বাসায় ছিলেন না। পরে তিনি তার করোনা পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি প্রতিষ্ঠানকে জানান। প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে নকল সনদ সরবরাহের অভিযোগে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, তিনি আসলে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কলেজে ল্যাবে এই রকম প্রতারক কীভাবে ঢুকল সে বিষয়ে হাসপাতাল বা কলেজ কর্তৃপক্ষ কোন কিছু বলতে পারেনি।